Travel & Explore Yourself | Do It Now, The Future Is Promised To No One.

বাংলাদেশের অদেখা জায়গা “ছাগলকান্দা ঝর্ণা, চট্টগ্রাম”।

Leave a comment

“একদিনে ১০/১২টা ঝর্ণা,পাহাড়ি অ্যাডভেঞ্চার, ক্যাসকেড,ঝিরিপথের মধ্যে দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা রোমাঞ্চকর হাঁটা সাথে অনবরত পাখির কিচিরমিচির, নিস্তব নিরিবিলি জনমানবশূন্য পাহাড়ি একটা পরিবেশ”!! সব যদি একদিনে উপভোগ করতে চান তাহলে চলে আসুন কমলদহ ট্রেইলে এবং ছাগলকান্দা ঝর্ণা’য়।

লিখেছেনঃ সাদমান সাকিব আয়ন।

তারিখঃ ১৮/০৯/২০১৮

ট্রেইল’টা শুরু হয় কমলদহ বা রুপসী ঝর্ণা থেকে। ওইখানে ছোট বড় মিলায় প্রায় ৫০টারো বেশী ঝর্ণা আছে।সব গুলা ঝর্ণাতে যদিও যাওয়া যায় না।১০/১২টার মতন ছোট বড় ঝর্ণা আপনি দেখতে পারবেন।তবে দুইটা ঝর্ণা সবচেয়ে সুন্দর “ছাগলকান্দা বা কমলক ঝর্ণা” এবং “বড়কমলদহ ঝর্ণা” বা “রুপসী ঝর্ণা”
আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আপনি কমলদহ ট্রেইল দিয়ে ছাগলকান্দার উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করলে ইমোশনা’ল হয়ে হাটতেই থাকবেন খালি!একটা সেকেন্ডের জন্যে ক্লান্তি আসবে না!শুধু ইচ্ছা করবে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা ঝিরিপথ,ক্যাসকেড গুলা’র মধ্যে খালি হাঁটতেই থাকি!!আর শেষমেশ ত ছাগলকান্দা ঝর্ণা!! *_* *_* *_* ছাগলকান্দা ঝর্ণা’য় মাঝে মাঝে রংধনু দেখা যায়! আপনার ভাগ্য ভাল থাকলে দেখতেও পারেন ঝর্ণা’র মধ্যে রংধনু!!
এককথায় একদিনের জন্যে পারফেক্ট একটা টুর!!

কীভাবে যাবো কমলদহ ট্রেইলে বা ছাগলকান্দা ঝর্ণা’য় ??!

[]আপনি একদিনেই ঢাকা থেকে আসে কমলদহ ট্রেইলের ১০/১২টা ঝর্ণা সব গুলাই দেখতে পারবেন।

[]আপনি যেকোন জায়গা থেকে প্রথমে চট্টগ্রামের বড় দারোগা’র হাটে নামবেন।তারপর ওইখান থেকে ঢাকা মুখি রাস্তার দিকে ৪/৫মিনিট হাঁটবেন দেখবেন একটা ইট ভাটা হাতের ডান দিকে আছে এবং একটা মাটির রাস্তাও গেছে হাতের ডান দিক দিয়ে ভিতরে।ওইদিক দিয়ে আগায় যাবেন।কিছুদূর গেলে রেললাইন পাবেন।রেললাইন পার হয়ে সোজা হাঁটা দিবেন!কিছুদূর গেলে ঝিরিপথ পাবেন!ঝিরিপথ ধরে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মতন হাঁটলেই পাবেন “বড় কমলদহ” বা “রুপসী ঝর্ণা”। বড়দারোগা’র হাট থেকে ৪০মিনিটের মতন হাঁটলে আপনি বড় কমলদহ বা রুপসী ঝর্ণা’র দেখা পাবেন।
(বড় কমলদহ ঝর্ণা’র ছবি কমেন্টে দিলাম!এইখানে শুধু ছাগলকান্দা আর পাহাড়ি ঝিরিপথের ছবি দিলাম)

[]এবার বলে রাখি আপনি যদি শুধু বড় কমলদহ ঝর্ণা বা রুপসী ঝর্ণা দেখতে চান তাহলে নিজেরা গিয়েই দেখে আসতে পারবেন কিন্তু যদি ছাগলকান্দা ঝর্ণা সহ বাকি ঝর্ণা গুলা দেখতে চান তাহলে সাথে অবশ্যই একজন গাইড রাখবেন । একা যাওয়ার চেষ্টা করবেন না।অনেক আঁকাবাঁকা ডান বায়ের পাহাড়ি পথ। একা যাওয়া যায় কিন্তু অনেক বেশী রিস্কি হয়ে যায়।আপনি ঠিক মতন সব গুলা ঝর্ণা’ও দেখতে পারবেন না তার উপর আবার এখন বৃষ্টির সময়,যখন তখন বৃষ্টি নামে, তাই সেফ হিসাবে গাইড নিয়ে নিবেন সাথে করে।

[]কমলদহ ঝর্ণা থেকে ছাগলকান্দা ঝর্ণা’য় যাওয়ার দুইটা উপায় আছে!
১.বড় কমলদহ ঝর্ণা পার হয়ে অর্থাৎ ঝর্ণা বেয়ে উপরে ওঠা।এইক্ষেত্রে আপনার টাইম অনেক বাঁঁচবে।
২.ঘুরে পাহাড়ি পথ দিয়ে উপরে ওঠা।

[]বলে রাখা ভালো সাহস ভাল কিন্তু বেশী সাহস ভাল না!! :3 এখন এমনি বৃষ্টির সময়,পুরা কমলদহ ঝর্ণা’টা পিচ্ছিল হয়ে থাকে!একবার পরে গেলে হাড্ডিগুড্ডি শরীরে যা আছে তা আর খুঁজে পাওয়া যাবে না!তাই একটু ঘুরে পাহাড়ি পথ দিয়ে যাওয়াই ভাল।ঘুরে গেলেও মজা পাবেন।এই পথটাও অনেক সুন্দর

[]তাছাড়া সাথে গাইড ত আছেই।আর গাইড না থাকলে কমলদহ ঝর্ণা’র উপরে উঠে সামনে একটু হাঁটলে দেখবেন পথ দুইভাগ হয়ে গেছে,বামে আর ডানে!মূলত এই দুই পথ দিয়েই ঝর্ণা গুলাতে যায়! অনেক প্যাঁচানো বাম ডানের রাস্তা।লেখতে গেলেই মাথা আউলায় যায়!! :3 :3 তাই বলবো কি গাইড নিয়ে নেন!আর যদি একদম বন্য টাইপ অ্যাডভেঞ্চার কর‍তে চান তাহলে বাম ডানের পথে গিয়ে নিজে নিজেই এক্সপ্লোর করুন একটার পর একটা ঝর্ণা!! :3

[]মূলত “বড় কমলদহ” ঝর্ণা’র উপর থেকেই শুরু হয় অসাধারণ সব পাহাড়ি ঝিরিপথ, ক্যাসকেড, শান্ত,নিরিবিলি পাহাড়ি পরিবেশ!! *_* মানুষজন খুব-ই কম যায় ঝিরিপথে। সবাই কমলদহ দেখেই ফিরে আসে। তাই সারাদিন নিজের মতন টাইম কাটাইতে পারবেন ওইখানে।

[]আমাদের গাইড ছিল নিশাত মামা।নাম্বার : 01879692284
সারাদিন ছিল আমাদের সাথে
আমরা সারাদিনের জন্যে ৫০০টাকা+বখশিশ সহ ৬০০টাকা দিয়ে দিছি!

[]কেমন খরচ পড়বে?
মূলত ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের বাস/ট্রেনের যাওয়া আসার খরচ’টাই যা ।
আর খরচ বলতে দুপুর আর রাতের খাবার, গাইডের টাকা এবং পানি টানি বিস্কুট কলা আপনি যা খান।
আমরা ঢাকা থেকে ৯জন গেছিলাম।বাসে যাওয়া আসা,খাওয়া-দাওয়া সব সহ পার হেড ১৩০০র মতন পড়ছে!

মনে রাখবেন!
[]বড়দারোগা’র হাট থেকে কমলদহ ঝর্ণা’য় যাওয়ার সময় রেললাইনের পরে ৩,৪টার মতন দোকান পাবেন।যদি গাইড নিতে চান তাহলে এইখান থেকেই আপনার গাইড ঠিক করে নিতে হবে।
[]আর দুপুরে খেতে চাইলে ওই দোকান গুলাতে আগেই বলে রাখতে হবে।
[]বৃষ্টির সময় তাই জোক আছে।সাথে লবণ, সরিষার তেল রাখতে পারেন।
[]পাহাড়ি ঝিরিপথে অনেক খানাখন্দ আছে+পিচ্ছিল পথ অনেক!পানির জন্যে বোঝা যায় না।তাই সাবধানে চলাচল করবেন।সাথে একটা বাঁশ বা লাঠি টাইপ কিছু রাখতে পারেন।

আমি আলহামদুলিল্লাহ যত জায়গায় গেছি এই পর্যন্ত সবচেয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জায়গা পাইছি এই কমলদহ ট্রেইল এবং ছাগলকান্দা যাওয়ার পথের ঝিরিপথ গুলা।তাই দোয়া করে কেউ সেইখানে গিয়ে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না।দেশটাতো আমাদের তাই আসুন সবাই মিলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখি।
হ্যাপি ট্রাভেলিং :’)

#ছাগলকান্দা ঝর্ণা

Leave a comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.